প্রজাপতি। ছোট, রঙচঙে পতঙ্গ যারা আমাদের চারপাশে ঘুরে ফেরায়- তারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ আমাদের বাস্তুতন্ত্রে। কলম ধরলেন সুমন মান্না।
ওরা ডানা ঝাপটায়, ওরা ভেসে চলে, ওরা ঝলমল করে রঙে, লুকোচুরি খেলে, প্রজাপতিরা প্রকৃতির এমনই আশ্চর্য সুন্দর সৃষ্টি। এমন একটা বিচিত্র প্রজাতি যারা ভারতের সমগ্র প্রাণীকুলের ৬৫% বর্তমানে। প্রায় ১৫০০ এর মত প্রজাতির প্রজাপতি ভারত জুড়ে রয়েছে তাদের নিজ নি্জ বাসস্হানে। একদম ক্ষুদ্র grass jewel থেকে বৃহত্তম southern birdwing।
আমার-আপনার বাগানে ওদের নিত্য আনাগোনা, ওরাই কিন্তু প্রকৃতির জীবনচক্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোটি বছরের ওপর ওরা এই গ্রহে রয়েছে।পৃথিবীর বেশিরভাগ গাছপালাই এমন ভাবে নিজেদের সাজিয়েছে যাদের তাদের পরাগমিলন ও বংশবৃদ্ধিতে প্রজাপতি মুখ্য ভূমিকা গ্রহন করে।
প্রজাপতির উপস্হিতি প্রমাণ করে সেই জায়গার বাস্তুতন্ত্র কতটা সজীব।খাদ্য শৃঙ্খলে খাদ্য ও খাদক হিসাবে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়। প্রজাপতিরা পাখি, মাকড়শা, প্রজাপতিদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য।তাদের খেয়ে জীবনধারন করে প্রাণীকুলের একটা বড় অংশ। অনেক প্রজাতির প্রজাপতিদের দেখা যায় মাটি খুঁড়তে। মাটিতে খনিজ দ্রব্যের পরিমান ভাল মত রয়েছে এর থেকে বোঝা যায়।
শৈশব থেকেই ওরা আমায় আকর্ষন করত। আমার কাজের সূত্রে ভারতের বন্য পরিবেশে গিয়ে গিয়ে, এদের প্রতি একটা দুরন্ত আবেগ বা প্যাশান তৈরি হয়েছে। ওদের চেনা, ওদের নিয়ে পড়াশুনা করা, ছবি তোলা আমার প্রিয় কাজ। আমার অতিথিশালায় আমার অতিথিদের ওদের চেনানোর সুযোগ পেলে ছাড়ি না।
প্রজাপতিরা আমার কাছে প্রকৃতির সেই রূপ যা স্বাধীনতা, সৌন্দর্য, শান্তিকে তুলে ধরে।যে স্হানে তারা বাস করে তুলে ধরে তার সতেজতা।
লেখক পরিচিতি: সুমন মান্না একজন প্রকৃতিবিদ। কাজ করেছেন বিদেশি টিভি চ্যানেলে প্রজাপতি নিয়ে। বর্তমানে পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভে ইকো ট্যুরিজমের কাজে জড়িত।
Comments